কৃষক মোহাম্মদ ইলিয়াছ দীর্ঘদিন ধরে ধান ও সবজি চাষ করে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। তার সংসারে রয়েছে ৪ সদস্য । দীর্ঘ দিন ধরে ইলিয়াছের সংসারে সূখ ছিল,শান্তি ছিল। সন্তানরা স্কুলে যেত। সে মহানন্দে কৃষি কাজ নিয়ে মত্ত ছিল। এ কারণে দেশের উন্নয়নের ধারায় সে যুক্ত ছিল। তার মনে এ কারণে আনন্দ ছিল বেশী। কিন্তু তার সে সূখ আর নেই। সন্তানদের পড়া-লেখা ও দেশের উন্নয়নের ধারা বলতে এখন কল্পনাও করতে ও পারে না আর সে। কারণ তার চাষের জমিটি এখন আর নেই। এটি কেড়ে নিয়ে গেছে বাকঁখালী নদীর করাল গ্রাস। নদীর ¯্রােতের তোড়ে ভেসে গেছে তার ধানি জমি আর সবজির জমিও। এমনকি তার নিজের এবং স্বজনদের বাড়ি-ঘর পর্যন্ত এ নদীর ভাংগনে বিলীন হয়ে গেছে বেশ ক’বছর আগে।
এভাবে শুধু গর্জনিয়ার ইলিয়াছই নয় শুধু বাকঁখালী নদীর শতাধিক কিলোমিটার দীর্ঘ তীরে বসবাসরত অসংখ্য কৃষক এ ইলিয়াছের মতো বাড়ি-ঘর হারিয়ে অতি কষ্টে দিন যাপন করছে বর্তমানে। তাদের সংসারে নেই সেই সূখ নেই কোনো আনন্দ-উচ্ছাস। বাকঁখালীঁ নদী -তাদের সূখের সংসারে জ্বালিয়ে পুড়ে ছার-খার করে দিয়েছে তাদের সব স্বপ্ন।
গর্জনিয়া ইউনিয়নের মাঝিরকাটা গ্রামের বাসিন্দা ডা: মো: ইসহাক জানান,বাকঁকালী নদীটির উৎপত্তি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বুছি বা কালা পাহাড় থেকে। আর এটি মিলিত হয়েছে ককসবাজার শহরের নাজিরার টেক ও মহেশখালী চ্যানেল হয়ে বঙ্গোপসাগরে। শতাধিক কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদীটির উভয় তীরে বসবাস করে ২ শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক লোক। যাদের অধিকাংশই কৃষক। এ সব কৃষকের একটি বিরাট অংশ আজ বসত-বাড়ি হারা। তারা আপাতত আশপাশের কোথাও আশ্রয় নিয়ে কোন মতে দিনাতিপাত করছে জীবন বাঁচার তাগিদে। চাষের জমি,হালের বলদ,নিজের বাড়ি-ঘর সব হারিয়ে এখন তারা নামে কৃষক হলেও বাস্তবে নি:স্ব এক অলস ব্যক্তি।
তিনি আরো জানান, তার মাঝিরকাটা গ্রামের ৯৮ ভাগ মানুষ কৃষক। বাকঁখালী নদী তাদের এ গ্রামের শতাধিক কৃষকের বাড়ি-ঘর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে গত এক দশকে। তাদের ইউনিয়নের ৬ টি গ্রামের অন্তত ৪ টি মসজিদ ১টি মন্দির আর কয়েকশত একর চাষের জমি ইতিমধ্যেই এ বাকঁখালী নদীর ভাংগনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
রামুর ফতেখাঁর কূল ইউনিয়নের হাইটুপি গাছুয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুপিজুর রহমান জানান,সে একজন কৃষক। বাকঁখালী নদীর তীরে তার বসবাস অনেক দিন। এ বছর তার বাড়িটি বাকঁখালী নদীর কবলে পড়েছে। ইতিধ্যেই তার বাড়ির এক তৃতীয়াংশ বাকঁখালী নদী গ্রাস করে ফেলেছে। আজ কালের মধ্যেই তার সব শেষ হয়ে যাবে। বাড়িটির বাকি অংশ নদীতে বিরীন হয়ে যাবে।
কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের বাকঁখালী নদী সংলগ্ন চাষি জমির মালিক ও কৃষক জহির উদ্দিন জানান,তার পৈত্রিক প্রায় ১২ কানি জমি ইতিমধ্যেই বাকঁখালী নদীতে তলিয়ে গেছে। নদী শাসন বা কয়েকটি পাথর বাধঁ দিলেও হয়তো তার এ জমির এ অবস্থা হতো না। তার সাথে সুবিধা পেতো শতাধিক কৃষকও।
এভাবে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা অংশের প্রায় ৭০ কিলোমিটার আর রামু ও ককসবাজার সদর অংশের ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ নদিিটর তীরে বসবাসকারী দরিদ্র কৃষককুলের আহাজারিতে বর্তমানে আকাশ ভারী হয়ে উঠেছে হারানোর বেদনাতে। তারা মনে করেন- বান্দরবান বা ককসবাজারের কোন র্কতৃপক্ষই এ নদী শাসনের ব্যাপারে আন্তরিক নন বলে তাদের এ মরণ দশা।
তাদের অভিজ্ঞতা থেকে তারা আরো বলেন, বিগত দিনে সরকারের সাধারন বরাদ্দের অংশে কদাচিত কিছু কাজ হলেও অবশিষ্ট টাকা-কড়ি ভাগ-ভাটোয়ারাতেই শেষ হয়ে গিয়েছিল প্রভাবশালীদের হাত ধরে। তারা আর দেখতে চান না ্তাদের এ দূরাবস্থা। পাশাপাশি তারা জরুরী হস্তক্ষেপও কামনা করেন রামু-ককসবাজার সদর আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল’র।
এ বিষয়ে কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু মো: ইসমাঈল নোমান জানান,তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর এলাকার এমপি মহোদয় ও উপজেলা চেয়ারম্যানের পর্রামশে এ বাকঁখালী নদী শাসনের ব্যাপারে মহাপরিকল্পনা গ্রহন করবেন। যাতে করে তার এলাকার বাকঁখালী নদী তীরবর্তী লোকগুলোর বসতভিটা রক্ষা হয়। যেন রক্ষা হয় তাদের চাষের জমিও।
এদিকে নদী তীরবর্তী একাধিক সচেতন মহল দাবী করেন, দীর্ঘদিন ধরে বাকঁখালী নদীটি তাদের শতশত ঘর-বাড়ি ও শতশত একর চাষের জমি সহ ব্যাপক ক্ষতি করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাদের জানা মতে এ পর্যন্ত কোন উদ্য্গো নেননি কেউ। তাদের দাবী নদীটির দীর্ঘ এ পরিস্থিতি রোধ করতে মাতামুহুরী নদী সহ পাহাড়ি ঢলের ভাংগন রোধ করা অন্যান্য নদী শাসনের মতো অনুকরণধর্মী উদ্যোগ নিলে বাকঁখালী নদীটির রুক্ষ্ম চেহারা পাল্টে যাবে সহজে। পাশাপাশি প্রশাসনের কাছে শুধু শুধু কংচি বা ছোট্ট বল্লি বাধ দিয়ে সরকারের লাখ-কোটি টাকা নষ্ট না করতে ও তারা দাবী জানান একই সময়।
প্রকাশ:
২০১৬-০৭-২৯ ১৬:৩৮:২৪
আপডেট:২০১৬-০৭-২৯ ১৬:৩৮:২৪
- পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
- চকরিয়ায় সেনাবাহিনীর হাতে নারীসহ তিনজন গ্রেফতার
- মেরিন ড্রাইভ সড়কে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিহত
- চকরিয়ায় সাবেক এমপি জাফর সাঈদি সহ আওয়ামী লীগের ২৮৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় নতুন মামলা
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহী বাস থেকে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার, বিক্রেতা গ্রেফতার
- দুর্নীতির আখড়ায় কক্সবাজার সিটি কলেজ
- চকরিয়ায় ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা ছিনতাই
- বদরখালী সমিতির ১১টি মৎস্য প্রকল্পের নিলাম নিয়ে বিরোধ
- রামুতে আপন ভাতিজিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি
- রামুতে ল্যাপটপ পেলেন ৮০ নারী ফ্রিল্যান্সার
- চকরিয়ায় আওয়ামিললীগ ক্যাডার নজরুল সিণ্ডিকেটের দখলে ৩০ একর বনভুমি:
- চকরিয়া সদরের বক্স রোড সম্প্রসারণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ
- বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে গেলেন পদত্যাগ করা বিতর্কিত অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম
- চকরয়ার ঠিকাদার মিজান গ্রেফতার, কোটি টাকার ঋণের জেল-জরিমানার দায়ে
- কক্সবাজার আবাসিক হোটেলে ৭০ ইউপি সদস্যের ‘গোপন বৈঠক’, আটক ১৯
- চকরিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ২টি ডাম্পার ও স্কেভেটর জব্দ
- চকরিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় : কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
- ঈদগাঁও’র নবাগত ইউএনও বিমল চাকমা
- চকরিয়ার সাবেক এমপি জাফর আলম, সালাহউদ্দিনসহ আওয়ামী লীগের ৭৩৬ জন আসামী
- চকরিয়ায় ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা ছিনতাই
- উত্তপ্ত রামু সরকারি কলেজ: অধ্যক্ষ মুজিবের অপসারনের দাবিতে কার্যালয় ও প্রশাসনিক ভবনে তালা
- কুতুবদিয়ায় গর্তে ১০ লক্ষ মণ পুরাতন লবন,লোকসানের শংকা চাষীরা
পাঠকের মতামত: